হাসপাতালে তাণ্ডব: মৃত ঘোষণা হয়নি রোগী, তবু অশান্তি সৃষ্টি করে চিকিৎসায় বাধা! অপবাদ ছড়িয়ে চাঁদাবাজির চেষ্টার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি: বোলপুরের শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উত্তেজনা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল এক অভূতপূর্ব ঘটনায়। অভিযোগ, চিকিৎসাধীন এক রোগী এখনও জীবিত এবং তাঁর চিকিৎসা নিয়মমাফিক চললেও, কিছু দুষ্কৃতী রোগীর ‘আত্মীয়’ সেজে হাসপাতালে ঢুকে মিথ্যা গুজব ছড়ায়— “রোগী মারা গিয়েছে, অথচ হাসপাতাল লুকোচ্ছে!”। এই মিথ্যা অভিযোগকে পুঁজি করে তারা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবায় বাধা দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুর এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রোগীকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল এবং চিকিৎসকরা তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতির ব্যাপারে সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন । ঠিক সেই সময়ই ওই দুষ্কৃতীরা আচমকা ওয়ার্ডে ঢুকে চিকিৎসা থামানোর চেষ্টা করে। অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে চিকিৎসায় বাধা দিয়ে রোগীকে বিপদের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়, যেন পরিস্থিতি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে এবং পরে তার দায় হাসপাতালের ঘাড়ে চাপানো যায়।
পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলে হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স এবং কর্মীদের লক্ষ্য করে শুরু হয় শারীরিক নিগ্রহ, ধাক্কাধাক্কি ও হেনস্থার ঘটনা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগী এবং তাঁদের পরিজনদের মধ্যেও। বহু রোগীর চিকিৎসা সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়। হাসপাতালের ভেতরে কিছুক্ষণ জুড়ে কার্যত ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়।
চিকিৎসক মহলের অভিযোগ, এটি ছিল সম্পূর্ণ পরিকল্পিত হামলা। হাসপাতালের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ রটিয়ে কর্তৃপক্ষকে চাপে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করাই ছিল দুষ্কৃতীদের মূল উদ্দেশ্য।
ঘটনার পর হাসপাতাল প্রশাসন স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে—কারা এই দুষ্কৃতী, কারা তাদের পিছনে আছে এবং কেন এই নাশকতা—সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
একই সঙ্গে চিকিৎসক সংগঠন জানিয়েছে, বারবার হাসপাতালে হামলা বা অশান্তির ঘটনা ঘটলে রোগী পরিষেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার এই ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আপাতত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং রোগীর চিকিৎসা আগের মতই চলছে বলে হাসপাতাল সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে।
Comments
Post a Comment