সমাজের প্রান্তিক মানুষদের দুপুরের খাবার খাওয়ালো রিগেল ফাউন্ডেশান
ইন্দ্রজিৎ আইচ (কলকাতা): কলকাতার আহিরীটোলা উদ্যানে একটি উল্লেখযোগ্য খাদ্য দান অভিযানের আয়োজন করা হয়, যেখানে রিগেল ফাউন্ডেশন নামক একটি অলাভজনক সংস্থা তাদের "হাসি" ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে 8৫০ জনের বেশি মানুষকে পুষ্টিকর খাবার পরিবেশন করে। এই মহৎ উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত ছিল আহিরীটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি। এই অনুষ্ঠানটি গত ১৬ই এপ্রিল, ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়।
দান শিবিরের মেনুতে ছিল ভাত, ডাল, মুরগির ঝোল, আলু ভাজা এবং মিষ্টি— একটি ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের সমাহার। এই খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠান না শুধুমাত্র উপস্থিত জনগণকে পুষ্টি জোগানোর একটি মাধ্যম ছিল, বরং সামাজিক ঐক্য ও দায়বদ্ধতার এক অনুপম উদাহরণ স্থাপন করে।রিগেল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং অধ্যক্ষ সুভায়ু সাহা জানান," তাদের উদ্দেশ্য হলো সমাজের প্রান্তিক ও অভাবগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা এবং সামাজিক সচেতনতা জাগ্রত করা।" আহিরীটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সভাপতি উল্লেখ করেন যে, তারা এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগে সবসময় সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকে, কারণ এটি সমাজের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ববোধের বিকাশে সাহায্য করে। তাদের মতে, এই ধরনের উদ্যোগ কমিউনিটির সদস্যদের মধ্যে সহযোগিতা ও সমর্থনের বন্ধন আরও দৃঢ় করে।
বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক এবং সামাজিক উদ্যোক্তা সৌম্যদীপ সোম বলেন "প্রতিটি খাদ্য বিতরণ একটি আশ্বাসের প্রতিফলন, একটি বার্তা যে আমরা কেউ একা নই, আমাদের পাশে একটি সম্প্রদায় আছে যা আমাদের সাহায্যের জন্য সবসময় প্রস্তুত।"অনুষ্ঠানে উপস্থিত একজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, "আমরা এমন একটি সমাজে বাস করছি যেখানে অনেকেই প্রতিদিন দুবেলা পর্যাপ্ত খাবার পান না। রিগেল ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগ তাদের জন্য বড় সহায়ক হয়েছে। এটি শুধুমাত্র খাবার বিতরণ নয়, এটি হলো ভালোবাসা ও যত্নের প্রকাশ।"
এই খাদ্য দান অভিযানের মাধ্যমে রিগেল ফাউন্ডেশন ও আহিরীটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি যৌথভাবে প্রমাণ করেছে যে, সম্প্রীতি ও সহানুভূতি দিয়ে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনা সম্ভব। এই উদ্যোগের মাধ্যমে তারা সামাজিক বৈষম্য দূর করে সকলকে একটি সমান সামাজিক পরিসরে আনার চেষ্টা করেছেন।এমন উদ্যোগ নিশ্চিতভাবে অন্যান্য সংস্থা এবং ব্যক্তিদেরও প্রেরণা দেয়, যাতে তারা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী সামাজিক কল্যাণে অবদান রাখতে পারে। সমাজের প্রতিটি অঙ্গনে এই ধরনের মানবিক কর্মকাণ্ড গ্রহণ করে আমরা যে কোন সামাজিক বাধা অতিক্রম করতে পারি।
অনুষ্ঠানের শেষে, আহিরীটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির আয়োজকরা সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আরও এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দেন। রিগেল ফাউন্ডেশনের কর্মীরা সাফল্যের সাথে এই অনুষ্ঠান সমাপ্তির পর মনে করেন যে, তাদের এই কাজ অন্যদের জন্য একটি উদাহরণ হয়ে উঠবে এবং সমাজে আরও বৃহত্তর পরিবর্তন আনার প্রেরণা যোগাবে।
এই খাদ্য দান অভিযানের মাধ্যমে সামাজিক সংহতি ও ঐক্যের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে, যা প্রমাণ করে যে যৌথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনা দ্বারা কিভাবে বড় ধরনের সামাজিক প্রভাব ফেলা সম্ভব। সামগ্রিকভাবে, রিগেল ফাউন্ডেশন এবং আহিরীটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির যৌথ প্রয়াস একটি উজ্জ্বল এবং প্রেরণাদায়ক ভবিষ্যতের পথ দেখায়।
Comments
Post a Comment