২২ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব জুড়ে পালন করা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল উইক অফ ডেফ পিপল

ইন্দ্রজিৎ আইচ (কলকাতা): বিশ্ব স্বাস্থ্য-সংস্থা (WHO)-র হিসেব অনুযায়ী বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১.৫ বিলিয়ন শ্রবণ শক্তির  ঘাটতি নিয়ে জীবন যাপন করেন। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা আগামী ২৫ বছরে অর্থাৎ ২০৫০ সালে সংখ্যাটা  বেড়ে দাঁড়াবে ২.৫ বিলিয়ন। পৃথিবী জুড়ে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন শিশুর শোনবার শক্তি নেই বললেই চলে। এদের ৬০ শতাংশের ক্ষেত্রে এই সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল। স্রেফ সচেতনতার  অভাবে এইসব শিশুদের বিশেষ ভাবে সক্ষম হয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে। শ্রবণ সংক্রান্ত সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে ২২ – ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব জুড়ে পালন করা হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল উইক অফ ডেফ পিপল। এই উপলক্ষ্যে দ্য অ্যাসোশিয়েশন অফ অটোল্যারিঙ্গোলজিস্ট অফ ইন্ডিয়া  (AOI) কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিলো। সেখানে আলোচিত হয় উন্নত প্রযুক্তির চিকিৎসার সাহায্যে কি ভাবে কানের অনেক সমস্যার সমাধান করা যায়। কিন্তু শ্রবণ শক্তির ব্যাপারে আম জনতার সচেতনতা  তুলনামূলক অনেকটাই কম।  AOI -র সর্বভারতীয় প্রেসিডেন্ট ইএনটি সার্জন ডা. দ্বৈপায়ন মুখোপাধ্যায় জানালেন যে অতিরিক্ত হেড ফোন ব্যবহা্র করলে শ্রবণ শক্তি কমে যাবার ঝুঁকি থাকে। উৎসবের সময় শব্দবাজির তাণ্ডবে কানের ভয়ানক ক্ষতি হয়, ক্রমশ শোনার ক্ষমতা কমতে থাকে। দুর্গা পুজোর সময় থেকেই শব্দবাজি আর মাইকের দাপট শুরু হয়। কালিপুজোর সময় ব্যাপারটা অসহনীয় হয়ে ওঠে। শিশু থেকে বয়স্ক কতজন মানুষ যে পটকার শব্দে বধিরতার দিকে এগিয়ে যান তার হিসেব নেই। তাই অ্যাসোশিয়েশনের পক্ষ থেকে খ্যাতনামা নাক কান গলা বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে অনুরোধ জানিয়েছেন, বললেন ডা দ্বৈপায়ন মুখার্জি। 
বারে বারে সর্দিকাশি থেকে কানের সংক্রমণ হয়। বৃষ্টিতে ভিজে বা পুকুরে স্নান করার ফলে কান থেকে রস পড়া বা কানে ব্যথার সমস্যা হলে  শ্রবণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এরকম সমস্যা হলে অবশ্যই ইএনটি বিশেষজ্ঞর পরামর্শে চিকিৎসা করানো উচিৎ বলে জানালেন AOI পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রেসিডেন্ট  ডা. উৎপল জানা। সংস্থার সেক্রেটারি  ডা. অজয় খাওয়াস জানালেন যে অন্যান্য অনেক অসুখের মতই কানে শোনার  অসুবিধে যদি জন্মের সময় নির্ণয় করা যায়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে শক্তিশালি হিয়ারিং এড দিয়ে বা দরকার হলে ককলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট করে শিশুর শ্রবণ শক্তি ফিরিয়ে আনা যায়। সংস্থার সদস্য আর এক ইএনটি বিশেষজ্ঞ ডা. স্নেহাশিস বর্মণ বললেন  যে নাগাড়ে হেডফোন ব্যবহার করলে প্রথমে সাময়িক ও পরবর্তীতে সম্পূর্ণ ভাবে বধিরতার ঝুঁকি থাকে। কাজের জন্য প্রয়োজন হলে ৫০ ডেসিবলের কম মাত্রার শব্দ কম্পাঙ্ক যুক্ত  হেড ফোন ব্যবহার করা উচিৎ। একথাও মনে রাখা উচিৎ যে টানা ২ ঘন্টার বেশি হেড ফোন ব্যবহার চলবে না। ২৮ সেপ্টেম্বর সকলে পুজোর আনন্দে মেতে থাকবেন, ওই দিন ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর দ্য ডেফ। AOI এর ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ডা দ্বৈপায়ন মুখার্জি জানালেন  শোনার সহায়ক নার্ভ ( অডিটরি নার্ভ) দূর্বল থাকলে ছোট বয়স থেকেই হিয়ারিং দিতে হবে। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ডিজিটাল হিয়ারিং এড কানে শোনার সব ঘাটতি দূর করতে পারে। ডা. সৌমেন্দ্রনাথ বন্দোপাধ্যায়ের কাছে জানা গেল বাচ্চাদের পাশাপাশি বেশি বয়সেও নানান কারণে শ্রবণ ক্ষমতা লোপ পেতে পারে। চশমার মত হিয়ারিং এডকে জীবনের অঙ্গ করে নিতে পারলে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায় অনায়াসে। কোলাহল মুখর জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকবেন না।

Comments

Popular posts from this blog

দক্ষিণ ২৪পরগনা ঠাকুরপুকুর সরোজ গুপ্ত ক্যান্সার সেন্টার এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নতুন প্রযুক্তির রেডিওথেরাপি মেশিন এর শুভ উদ্বোধন

बैंक ऑफ इंडिया ऑफिसर्स एसोसिएशन ! पूर्वी भारत शाखाओं की, 60वीं वार्षिक आम सभा की बैठक !

SH Binayak Multi-speciality Hospital, in association with the Institute of Breast Disease Kolkata and Asian Medical Foundation, launches "SNEHA SPARSHA" - A Dedicated Homecare Initiative for Cancer Patients