টাউন হলে ১৫ তম ‘চেস ফর ইয়ুথ’ এর উদ্বোধন করলেন প্রাক্তন ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া
ইন্দ্রজিৎ আইচ (কলকাতা): দাবা খেললে বুদ্ধি বাড়ে, মাথা ঠাণ্ডা থাকে শুধু তাই নয় যে কোনো কাজে সাফল্য পাওয়া যায়, এমন কি দাবা খেলায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবার সুযোগ থাকে। এই কথা অনেক বার বলেছেন প্রখ্যাত দাবাড়ু দিবেন্দু বড়ুয়া। সেই তরুণ দাবাড়ুদের প্রতিভা বিকাশে এক অসাধারণ উদ্যোগ হিসেবে আজ ৩১ অক্টোবর ২০২৫ কলকাতার ঐতিহ্যবাহী টাউন হলে উদ্বোধন হলো ‘চেস ফর ইয়ুথ’-এর ১৫তম টুর্নামেন্টের। আয়োজনে রয়েছে ধনুকা ধুনসেরি দিব্যেন্দু বড়ুয়া চেস একাডেমি ও অলস্পোর্ট ফাউন্ডেশন। প্রতিযোগিতা চলবে আগামী ৩ নভেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত।
এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন দেশের ২৫০টিরও বেশি স্কুলের প্রায় ৬৭০ জন তরুণ দাবাড়ু। তিনটি বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে — জুনিয়র (আন্ডার ৬, ৮ ও ১০), সিনিয়র (আন্ডার ১২, ১৪ ও ১৬) এবং প্রিমিয়ার গ্রুপ (আন্ডার ২৫)। প্রিমিয়ার গ্রুপে নাম লিখিয়েছেন দেশের শীর্ষ দাবাড়ুরা — গ্র্যান্ডমাস্টার মিত্রভা গুহ, ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার সৌহার্দ্য বসাক, রাজদীপ সরকার, সঙ্কেত চক্রবর্তী, শাহিল দে, শুভায়ন কুণ্ডু এবং উইমেন ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার অর্পিতা মুখার্জি। এই বিভাগে মোট ২,২০,০০০ টাকার নগদ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রথম পুরস্কার ৫০,০০০ ও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। জুনিয়র ও সিনিয়র গ্রুপের বিজয়ীদের মধ্যে মোট ১২০ টি ট্রফি বিতরণ করা হবে।
আজকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পদ্মশ্রী ও অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত কিংবদন্তি ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া, গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া, গ্র্যান্ডমাস্টার দীপ সেনগুপ্ত, (কমনওয়েলথ দাবা চ্যাম্পিয়ন ও তিনবারের চেস ফর ইয়ুথ বিজয়ী – ২০০৭, ২০০৮, ২০০৯), মি. আনন্দ ধনুকা (চেয়ারম্যান, ধনুকা ধুনসেরি গ্রুপ), সৌরভ দেব (অলস্পোর্ট ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি), মিস ফিনিক্স ধানুকা, IM সৌহার্দ্য বসাক, GM মিত্রভা গুহ, WIM অর্পিতা মুখার্জি, এবং রাজ্যের বিশিষ্ট দাবা প্রশিক্ষক ও ক্রীড়া সংগঠকবৃন্দ। উদ্বোধনী ভাষণে আজ বাইচুং ভুটিয়া বলেন, আজ এই দাবা প্রতিযোগিতায় এসে “এত সংখ্যক তরুণ তরুণীর প্রতিযোগীর অংশগ্রহণ এবং বাবা-মায়ের উৎসাহ দেখে সত্যিই অনুপ্রেরণা পেলাম। দিব্যেন্দু বড়ুয়া চেস একাডেমিকে ধন্যবাদ জানাই এমন একটি দারুণ উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। আজকের দিনে ভারতকে বিশ্বে গর্বিত করছে যে খেলা, তা নিঃসন্দেহে দাবা। আমার শুভেচ্ছা রইল সকল প্রতিযোগীর প্রতি — মন দিয়ে খেলো, আনন্দ নিয়ে খেলো, চাপ নিয়ে নয়। জয় ভালো, কিন্তু হেরে গিয়েও শেখার আছে অনেক কিছু।তিনি আরও বলেন, “ছোটবেলায় আমি জিমন্যাস্টিকস, ফুটবল আর দাবা—সবই খেলেছি। এখনো দাবা খেলতে পারি! বাচ্চাদের উচিত সব রকম খেলা দেখানো, কারণ শারীরিক যে কোনো খেলা মনোযোগ ও একাগ্রতা বাড়ায়, যা দাবার ক্ষেত্রেও খুব দরকার।”উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া বলেন,-“চেস ফর ইয়ুথ আজ শুধু একটি টুর্নামেন্ট নয়, এটি তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মানসিক বিকাশ ও প্রতিযোগিতার চেতনা জাগিয়ে তোলার এক সেতুবন্ধন। এই মঞ্চ থেকেই একদিন অনেক আন্তর্জাতিক তারকা উঠে আসবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন অর্পিতা মুখার্জি, এবং আজ সমগ্র পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। শিশু থেকে শুরু করে অভিজ্ঞ দাবাড়ু — সবাই মেতে উঠেছিল এই দাবার উৎসবে। আগামী ৩ রা নভেম্বর সোমবার বিকেল ৫ টায় হবে এই দাবা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী।
Comments
Post a Comment